
ভারত থেকে বেসরকারিভাবে গম আমদানিতে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। বুধবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দেশে গমের সরবরাহ নিয়ে কোনো ধরনের সংকটের শঙ্কা উড়িয়ে দেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, গম আমদানির ক্ষেত্রে রাশিয়া এবং ভারতের বিকল্পও খোঁজা হচ্ছে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতীয় হাইকমিশন একটি প্রেস কনফারেন্স করেছে। সেই প্রেস কনফারেন্সের কপি তারা আমাদের কাছে পাঠিয়েছে। তারা বলেছে, প্রতিবেশী দেশের জন্য গম আমদানিতে কোনো অসুবিধা নেই। তার আলোকে আমরা টেন্ডারও করে যাচ্ছি। আগামী ২৩ ও ২৯ মে আমাদের টেন্ডার আছে। তাদের ঘোষণার পর জি-টু-জি (সরকার বনাম সরকার) প্রস্তাবও পেয়েছি আমরা।
‘সরকারিভাবে গম নিয়ে আমরা চিন্তা করছি না। আমরা বলেছি বেসরকারিভাবে যারা আমদানি করে তাদের কী হবে? ভারত বলেছে যে বেসরকারি পর্যায়ে আমদানিতেও সমস্যা হবে না। মন্ত্রণালয় লিখলে তারাও (বেসরকারি আমদানিকারক) পারবে। অনেকেই ভারতীয় গম কিনে রেখেছে। এলসি হয়তো করেনি। সেগুলো তারা সরকারের অনুমতি নিয়ে আনবে।’
গম আমদানির ক্ষেত্রে রাশিয়া ও ভারতের বিকল্পও খোঁজা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া ও ভারতের বাইরে অন্যান্য উৎসও খুঁজছি আমরা। বুলগেরিয়ার সঙ্গে আমাদের এমওইউ হয়েছে। তাদের সঙ্গে মিটিংয়ে বসবো আমরা। কোনো অসুবিধা হবে না।’
‘চালের দাম বৃদ্ধি সাময়িক’
চালের দামে ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে সময়টা যাচ্ছে সেটাকে মৌসুমের সন্ধিক্ষণ বলা যেতে পারে- পুরনো চালের শেষ সময় আর নতুন চালের আগমন। এই সন্ধিক্ষণে মিলাররা বাজার থেকে ধান কেনায় ব্যস্ত, তারা এখনও পুরো মাত্রায় উৎপাদনে যায়নি। তারপরও আমরা যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের মনিটরিং খুব শক্ত। আশা করি চালের দাম সহনশীল পর্যায়ে চলে আসবে।’
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘অটো রাইস মিল ছাড়া হাস্কিং চাতাল যেগুলো রয়েছে, এরা তখন বাজারটা কন্ট্রোলে রাখে। দুই গাড়ি কেনে, দুই গাড়ি ছাড়ে। অটো রাইস মিলগুলো মজুদ সম্পন্ন করে এখনও উৎপাদনে যায়নি। হাস্কিং চাতালে ধান সিদ্ধ করে শুকাতে দু-তিন দিন লাগে। সেখানে বৃষ্টির কারণে তিন-চারদিন লেগে যাচ্ছে।
‘আমাদের ১১ লাখ টন চাল কেনার ঘোষণা আছে। ১৬ মে ছিল চুক্তির শেষ তারিখ। এ সময়ের মধ্যে ১০ লাখ ৭৬ হাজার টনের মতো চাল কেনার চুক্তি হয়ে গেছে। প্রায় ৯৮ শতাংশ সংগ্রহের জন্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। সেদিক দিয়ে মনে করছি আমরা সফল।’
চাল-গমসহ পণ্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ফায়দা লুটার জন্য, রাজনীতির জন্য কেউ বক্তব্য দিলে তা ভিন্ন কথা। সরকারের পরিকল্পনার অভাবে প্রতিদিনই চালের দাম বাড়ছে- বিএনপি মহাসচিবের এ বক্তব্য সত্য নয়।’
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, হাওরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলেও সেখানে আহামরি কোনো ফসলের ক্ষতি হয়নি। হাওরে ২ থেকে ৩ শতাংশ ধান নষ্ট হয়েছে। তবে এবার অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে।’