
খুলনায় ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে বিপাকে পড়া কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন যুবলীগ নেতাকর্মীরা। শ্রমিকের ঘাটতি মেটাতে বিকল্প হিসেবে কৃষকদের ধান কাটা ও মাড়াই মেশিন দিয়েছে মহানগর যুবলীগ। মেশিনের জ্বালানি ও অপারেটরের ব্যয় তারাই বহন করবেন।
মহানগর যুবলীগ জানায়, খুলনা অঞ্চলের বিপুলসংখ্যক কৃষক ধান কাটা ও মাড়াই মেশিনের সুবিধা পাচ্ছেন। প্রতি বিঘার ধান কাটতে কৃষকের কাছ থেকে প্রতীকী ১ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।
ধান উৎপাদনে বরাবরই এগিয়ে থাকেন খুলনার কৃষকরা। দুই বছর ধরে শ্রমিক না যাওয়া এবং কৃষি সরঞ্জামসহ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় তাদের।
চলতি মৌসুমে উৎপাদন খরচ বাড়লেও ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের।
এ অবস্থায় কৃষকের দুর্ভোগ লাঘবে ব্যতিক্রম এই উদ্যোগ নিয়েছে খুলনা মহানগর যুবলীগ।
যুবলীগের পক্ষ থেকে তেরখাদায় কৃষকদের মাঝে ধান কাটা ও মড়াই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। এতে কৃষকদের আগে যেখানে এক বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ১ হাজার টাকা খরচ করতে হতো, এবার তারা মাত্র ১ টাকায় এক বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াই করতে পারবেন।
শনিবার খুলনার তেরখাদার আজোগড়ায় কৃষকদের ধান কাটা ও মাড়াই মেশিন দেয়া হয়েছে।
তেরখাদার আজোগড়া বিলের চার হাজার বিঘা জমির মালিক প্রায় ৫০০ কৃষক ফসল কাটতে এই যন্ত্র ব্যবহার করবেন।
কৃষক শুনু গাইন বলেন, ‘আমার সাড়ে সাত বিঘা জমি। গত বছর ধান কাটতে ও মাড়াই করতে খরচ হয়েছে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এর সঙ্গে বীজ, সেচ, সার, কীটনাশক ও যানবহন খরচ যোগ করে যে উৎপাদন ব্যয় তা ধান বিক্রি করে পাই না। আমাদের পক্ষে ধান চাষ বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এখন আমাদের কিছুটা লাভ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগে এক মণ ধান উৎপাদনে ব্যয় হতো ৭৫০ টাকার মতো। সেখানে বাজারে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা মণ বিক্রি হলে কিছুটা লাভ হয়। কিন্তু বাজারে ধানের দাম সাড়ে ৮০০ টাকার বেশি হয় না। বাড়ি বাড়ি এসে যারা ধান কেনে তারা দিতে চায় ৭০০ টাকা মণ। যুবলীগের দেয়া কৃষি সরঞ্জাম আমাদের উৎপাদন খরচ কমিয়ে লাভের মুখ দেখাবে।’
এ বিষয়ে খুলনা নগর যুবলীগের আহ্বায়ক সফিকুর রহমান পলাশ বলেন, ‘খুলনা অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এ কারণে আমরা করোনার সময় থেকে প্রতি বছরই কৃষি সরঞ্জাম বিতরণ করে আসছি।’
তিনি বলেন, ‘ধান মাড়াইয়ের এই মেশিনের দাম ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং ধান কাটার মেশিনের দাম ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। মেশিনের জ্বালানি ও চালকের খরচও আমরা দিচ্ছি। প্রতি বিঘার ধান কাটতে কৃষকদের কাছ থেকে প্রতীকী দাম বাবদ ১ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।’