
ধান ও লিচুর জেলা দিনাজপুরে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে আনারস চাষ করে সফলতা পেয়েছেন নূরুন্নবী আশিকি বাবুল (৪৫) নামে এক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। তার বাগানে লম্বা ধারালো সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে আনারসগুলো। কোনোটার রঙ গাঢ় সবুজ, কোনোটা লাল খয়েরি রঙ ধারণ করেছে। সিলেট বা টাঙ্গাইলের মতোই রসালো মিষ্টি এই আনারস। আকার এবং স্বাদও এক।
জেলার ফুলবাড়ী পৌর শহরের তেঁতুলিয়া গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে নূরুন্নবী আশিকি বাবুল। পেশায় তিনি একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। কর্মরত আছেন দিনাজপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। প্রথমবারের মতো দিনাজপুরে সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে টাঙ্গাইলের মধুপুরের ক্যালেঙ্গ জাতের আনারস চাষ করেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে,পরীক্ষামূলকভাবে এখানে আনারস চাষে করে সফলতা পাওয়া গেছে। প্রথমবার আনারস ধরতে ১৮ মাস সময় লাগে। একটি গাছ থেকে চার-পাঁচটি করে ক্রাউন (চারা) পাওয়া যাবে। সেগুলো বিক্রি করা যাবে বা অন্য জমিতে লাগানো যাবে। এখন বাণিজ্যিকভাবে এ অঞ্চলে আনারস চাষ করা যাবে।
ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা হয় বাবুলের। আনারস চাষের শুরুর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০২০ সালের কথা। তখন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ছিলাম। সেখানে এক সহকর্মীর বাড়ি ছিল টাঙ্গাইলের মধুপুর। সহকর্মীর অনুরোধে একবার তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। আনারস চাষে খ্যাতি আছে মধুপুরের। সেখানে দেখি মধুপুর অঞ্চলের মাটি বেলে দো-আঁশ প্রকৃতির। আমাদের এলাকার মাটিও দেখতে প্রায় একই রকম। আনারস ক্ষেতে যে সমস্ত আগাছা দেখা যাচ্ছে আমার এলাকাতেও ওইসব আছে। এরপর কৌতূহল বেড়ে যায়। আনারস চাষের পরিকল্পনা শুরু করি।
২০২১ সালের নভেম্বর মাসে মধুপুর থেকে ২৫ হাজার চারা ট্রাকে করে নিয়ে এসে নিজ জমিতে রোপণ করি। তখন এলাকার অনেকেই হাসাহাসি করে বলেছে বেকার টাকা-পয়সা নষ্ট হবে। আমাদের এদিকে আনারসের চাষ হয় নাকি। তখন কারো কথায় কান দেইনি। শুধু আনারসের বাগানে ঠিকমতো পরিচর্যা করে গেছি। এখন প্রতিনিয়ত আমার
তিনি বলেন, প্রতিদিন এখন ক্ষেত থেকেই ১৫০ টাকা জোড়া আনারস বিক্রি করছি। একটি আনারস গাছে তিন-চারটি ক্রাউন (চারা) পাওয়া যায়। হিসেব অনুযায়ী আমার বাগানে এখন ৬৫-৭০ হাজার চারা রয়েছে। প্রতিটি চারার দাম ১০ টাকা করে। নতুন করে আরও তিন বিঘা জমিতে আনারস লাগাবো। সাধারণত অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত চারা লাগানোর সময়।