
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তায় এবং পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) এর সার্বিক সহযোগিতায় ৪০ শতাংশ জমিতে মাচা পদ্ধতিতে বেবি তরমুজ চাষ শুরু করেন শাহীন। এই ফলনে তার ব্যয় হয়েছে ২০ থেকে ২৪ হাজার টাকা মাত্র। এ পর্যন্ত বিক্রয় হয়েছে প্রায় ৭০০টি তরমুজ, যার বাজারমূল্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিকূলতায় এ জাতের তরমুজের কোনো ক্ষতির আশঙ্কা না থাকায় সাফল্যের মুখ দেখেছেন তিনি।
তরমুজের ওজনের বেশিরভাগই পানি। পানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় তরমুজ আমাদের দেহের পানিশূন্যতা দূর করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। নিয়মিত তরমুজ খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে, চুলও সুন্দর হয়। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়। এ জন্যই বাংলাদেশের কৃষক ও ভোক্তাদের মধ্যে ফলটির উৎপাদন বৃদ্ধি ও ক্রেতার সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। বিশেষ করে এপ্রিল-মে মাসে ব্যাপকারে চাহিদা বেড়ে যায় তরমুজের ।
প্রচলিত অনেক প্রজাতির তরমুজের মধ্যে বারোমাসি ‘বেবি তরমুজ’ অন্যতম। মাচা পদ্ধতিতে ‘বেবি তরমুজ’ চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষন ইউনিয়নের শাহীন।
তরমুজ সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে ওঠে। এটাই তরমুজের প্রধান মৌসুম। সম্প্রতি এ দেশের বাজারে মৌসুম ছাড়াও অন্য সময়ে তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ তরমুজ বেশি পাওয়া যায়। এ তরমুজকে অনেকে নাম দিয়েছেন ‘বারোমাসি তরমুজ’ অথবা ‘বেবি তরমুজ’। আকারে ছোট, লম্বাটে, ডিম্বাকার, কালো খোসা, ভেতরে টকটকে লাল শাঁসের তরমুজগুলো অসময়ে ওঠার কারণে বাজারে চাষিরা ভালো দাম পাচ্ছেন। কোনো স্থানে হলুদ রঙের খোসার অমৌসুমী তরমুজেরও চাষ হচ্ছে। দিন দিন অমৌসুমে তরমুজ চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চারা রোপনের শুরু থেকে ফল পরিপক্ক হতে ৭০ দিন পর্যন্ত সময় লাগে।
পরিবেশবান্ধব মালচিং পেপার ব্যবহার করে বেবি তরমুজ চাষ করেন শাহীন। এই পদ্ধতিতে তরমুজ আবাদে পরামর্শ দিচ্ছেন পরিবার উন্নয়ন সংস্থার কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “পরিবেশবান্ধব মালচিং পেপার পরিবেশের যেমন ক্ষতি করে না তেমনি এই মালচিং পেপার ব্যবহার করলে মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখা সম্ভব, অতিরিক্ত সেচের দরকার হয় না এবং অতিরিক্ত সার প্রয়োগের দরকার হয় না।”
তরমুজ গ্রীষ্মকালীন ফল হলেও এখন সারা বছর হয় এমন জাতের তরমুজ চাষ হচ্ছে। বাড়ির আশেপাশে পরিত্যক্ত জায়গায় মাচা পদ্ধতিতে এই তরমুজ আবাদে কৃষকদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা দেয়ার কথা জানালেন চরফ্যাশন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ওমর ফারুক।