
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজবোঝাই ভারতীয় ট্রাক।
সাত দিন ধরে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে গত কয়েক মাসের তুলনায় বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ আমদানি হলেও স্থানীয় পাইকারি ও খুচরা বাজারে এই দুই পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। চার দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের পাইকারি দাম ১০ টাকা ও কাঁচা মরিচের দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। ফলে খুচরা বাজারে প্রকারভেদে পেঁয়াজের কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও কাঁচা মরিচের কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা।
হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ৬ আগস্ট সকাল থেকে ১৩ আগস্ট সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দরে ৩২৯টি ট্রাকে ৯ হাজার ৮৪২ মেট্টিক টন পেঁয়াজ এবং ৭৩টি ট্রাকে ৪৮২ মেট্টিক টন কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে চলতি সপ্তাহে ২ দিনে ৯২টি ট্রাকে ২ হাজার ৭৪৪ মেট্টিক টন পেঁয়াজ ও ২২ ট্রাকে ১৬০ মেট্টিক টন কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারকেরা বলছেন, ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আর বাংলাদেশে গত সপ্তাহে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে তিন-চার দিন টানা বৃষ্টির কারণে জমিতে মরিচের গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ফলে বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম। এ কারণে স্থানীয় পাইকারি ও খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ খুচরা ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হলেও সেই কাঁচা মরিচ এখন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সম্পা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ইদ্রিস আলী আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ভারতে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচের দাম বেশি। ফলে বেশি দামে কিনে বাংলাদেশেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। গতকাল রোববার ভারতের নাসিক থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়েছে প্রায় ২৫ টাকা। পরিবহন খরচ, বন্দরে শ্রমিকদের দিয়ে পণ্য উঠানামা খরচ, সরকারি শুল্ক আরডি (রেগুলেটরি ডিউটি) ৫ শতাংশ ও সিডি (কাস্টমস ডিউটি) ৫ শতাংশসহ সব মিলে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৪০ থেকে ৪২ টাকা পড়েছে। আর পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
এর সঙ্গে ইদ্রিস আলী যোগ করেন, ভারতের বিহার থেকে আমদানি করা কাঁচা মরিচ প্রকারভেদে খরচসহ ১১৫ থেকে ১৩৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। সেটা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে তাঁরা ১২০ থেকে ১৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। এসব কাঁচা মরিচ জেলার বাইরে গেলে দাম আরও বাড়ছে।
হিলি সবজি বাজারের ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল সকাল থেকে ভারতের কালো জাতের কাঁচা মরিচ ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। গত সপ্তাহে এই মরিচ ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছিল।’
বিরামপুর নতুনবাজার এলাকার সবজির পাইকারি বাজারের কাঁচা মরিচ ব্যবসায়ী মানিক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাজারে যেসব কাঁচা মরিচ বিক্রি করছি, সেগুলো নওগাঁর মহাদেবপুর সবজির পাইকারি বাজার থেকে কেনা। সেখানে ১৬০ টাকা দরে কেনা আছে। আর পাইকারি ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করছি।’